রহস্যময় মাফিয়া সিরিজ
“ খুনি দ্যা মাস্টার মাইন্ড ”
লেখক: RAJA Bhuiyan.
পর্ব: ##[( ৯ )]##
.........
ভার্সিটির ক্যাম্পাসে বসে সজিব, সোহাগ,আয়ান,শ্রাবণ,রিদয় মিলে আড্ডা দিচ্ছিলো তখন সামনে
দিয়ে নুসরাত, রিয়া, স্নেহা,মিরা যাচ্ছিলো তাই সজিব তাদের ডাক দিয়ে থামায়। সজিব নুসরাত কে ভালোবাসে তাই সব সময় তার সাথে রাখতে চায়। নুসরাত সজিব কে একটুও দেখতে পারে না,,সজিব কে সে সহ্য ই হয় না। শুধু শুধু বিরক্ত করবে তাই সে সজিব কে একসেপ্ট করছে। কিন্তু এখনো সে তার পিছু ছাড়ছে না। ইদানীং সজিব নুসরাত কে খারাপ খারাপ ইংগিত করছে,, যেমন তার বন্ধুরা সবাই তাদের গার্লফ্রেন্ড কে নিয়ে রুম ডেট করে তাই। তাই সে নুসরাতের সাথে রুম ডেট নিয়ে জোরাজোরি করছে। নুসরাত সজিব কে না করে দিয়েছে, সে বলছে যে যা হবে সব বিয়ের পর হবে। কিন্তু সজিব এটা মানতে রাজি না,, সবাই নিজেদের গার্লফ্রেন্ড কে নিয়ে রুম ডেট করবে এটাই স্বাভাবিক। সজিবের এমন মন্তব্যে নুসরাত এখন সজিব কে এড়িয়ে চলছে। নুসরাত ও তার বান্ধবী রা সবাই বিরক্ত বোধ করে যেয়ে সজিবদের পাশে বসে। তারা সবাই নিজেদের মতো করে আড্ডা দিচ্ছিলো,
তখন ই ক্যাম্পাসের গেট দিয়ে R15 নিয়ে একটা ছেলে প্রবেশ করে। তাকে দেখে বুঝা যাচ্ছে যে সে বড়লোক বাবার বড়লোক সন্তান। পরনে তার গোলাপি কালারের শার্ট, স্টাইলিস ছেড়া পেন্ট,
চোখে স্টাইলিস চশমা, হাতে দামি ঘড়ি, স্টেট চুল, মুখের চাপ দাঁড়ির সাথে লেগে আছে মুচকি হাসি। সবাই বলাবলি করছে,
দেখছিস ছেলেটা কত্তো কিউট,হ্যানসাম। ছেলেটা বাইক টা পার্ক করে ক্লাস রুমের দিকে চলে যাচ্ছিলো। তখন সজিব ডাক দেয় ছেলেটাকে
সজিবঃ হেই ম্যান, কি নাম তোমার।
ছেলেটা: ইয়াপ ব্রো, আমার নাম ‘ রিয়াজ ’
সজিবঃ ওহ্ সুন্দর নাম,, চলো সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই। এই বলো আয়ান,সোহাগ এমন ভাবে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
রিয়াজ ছেলেটা অন্য শহর থেকে এসেছে,,এখানে চাচার
বাসায় থেকে পড়াশোনা করবে। সে এভার ৩য় বর্ষে পড়ছে,,বড়লোক বাবার একমাত্র ছেলে।
রিয়াজ কে সবারই ভালো লেগেছে,,অল্প সময়ে মোটামোটি সবার সাথে মিলে গেছে।
“ রাফিকে আনাফ সাহেবের বাড়ির দারোয়ান মফিজ মিয়া
ঢুকতে দেয় না কেমন যেন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাফির দিকে। মনে হচ্ছে কত বছরের চেনা শএু রক্তিম চোখে তাকিয়ে আছে মফিজ মিয়া। হুট হাট রাতের বেলা দারোয়ানের ঘুম ভাঙিয়ে রাফি চলে যায় রাতের পরিবেশ উপভোগ করতে। মফিজ মিয়ারও কিছু করার নেই কারণ বাড়ির মালিকের নির্দেশ রাফির সাথে যেন কোনো ঝামেলা না করে। বাধ্য হয়ে মফিজ মিয়া রাফিকে বাড়িতে ঢুকতে দিয়েছে।কেবল সন্ত্রাসিদের হাত থেকে বাচানোর জন্য,, রাফিকে এখানে থাকতে দেওয়া হয়েছে
তাই কেউ এটা মানতে পারছে না। তবু কেউয়ের কিছু করার নেই,, কেউ কিছু বলতে পারবে না কারণ আনাফ সাহেবের নির্দেশ কেউ অমান্ন করলে তার কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। রাফিকে বাড়ি
থেকে চলে যাওয়ার জন্য নুসরাত রাফিকে অনেক কথা শোনায়, কিন্তু রাফির একটা কথা আনাফ সাহেব বল্লে সে বাড়ি থেকে চলে যাবে।
* পরের দিন *
দেখ দেখ সবাই দেখ কেমন করে আজকে
ও ভার্সিটিতে আসছে ক্ষেত টা। আমি আর ক্ষেত টা কে সহ্য করতে পারছি না। রিয়ার কথা শোনে সবাই গেটের দিকে তাকায় দেখে রাফি একটা ঢিলেঢালা চকলেট কালারের শার্ট পরে ক্যাম্পাছে ঢুকতেছে। দুদিন ধরে রাফি ভার্সিটিতে আসছে না,,আজ হঠাৎ আসলো। রাফি গেট দিয়ে ঢুকার সময় কারো সাথে ধাক্কা লেগে পরে যায়। রাফি তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়ায়
আর অবাক চোখে লোকটার দিকে তাকায়,,মুখে সিগারেট
অর্ধেক অংশ পুড়ে গেছে, গলাতে লম্বা চেইন, দামি পোশাক,চোখে স্টাইলিস চশমা। হু ছেলেটা হচ্ছে রিয়াজ। রাফি সরি বলে আগাতে যাবে,তখন ই রিয়াজ রাফির দিকে হা করে তাকিয়ে বলে
-- লি....
রিয়াজ আর কিছু বলতে পারে না হয়তো
রাফি চোখ দিয়ে কিছু মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে,, রিয়াজ তা বুঝতে পেড়ে আর কিছু না বলে চলে আসে। অনেকেই এই দৃশ্য দেখে কথাকোপন শুরু করেছে-- কেনো রিয়াজ রাফি ক্ষেত টা কে কিছু বলল না। রাফি ক্লাসে যাবে এমন সময় সজিব ল্যাং মেরে রাফিকে নিচে ফেলে দেয়,,সবাই উচ্চ সরে হাসতে থাকে কিন্তু রিয়াজ হাসছে না,,দেখে আয়ান বলে কি হলো তুমি হাসছো না কেনো। রিয়াজ প্রতি উওরে কিছু বলে না। হয়তো রিয়াজ বুঝতে পারছে এখানে হাসলে বড় ধরনের সমস্যা হবে যার পরিনাম খুবই খাবাপ এবং ভয়ংকর হবে,,তাই সে চুপ। রাফি নিচে থেকে উঠে দাঁড়ায় আর নিজের চশমা টা ঠিক করে,, শরীর খেকে ময়লা গুলো ভালো করে পরিষ্কার করে একবার
সজিবদের দেখে মুচকি হেসে ক্লাসের দিকে রওনা দেয়। কিন্তু সবার চোখে ধরা না পরলেও রিয়াজের চোখে মুচকি হাসি দেয়া টা ধরা পরলো। রিয়াজ আর কিছু ভাবতে পারছে না।.....
“ এই ছেলে ক্লাসে এসে,,ক্লাসে মনোযোগ না দিয়ে বাইরের দিকে কি দেখ ”
রাফি ক্লাসে বসে,ক্লাসে
মনোযোগ না দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে
দেখতে থাকে,, ব্যস্ত এই ঢাকা শহর,, রাফিদের ক্লাস টা রাস্তার পাশে থাকায়, সেখান থেকে ভালো ভাবে রাস্তার সব কিছু দেখা যায়। ভিক্ষুক রা টাকার জন্য বিভিন্ন গাড়িতে ধাক্কা দিচ্ছে।কেউ খুলছে আবার কেউ খুলে কটু কথা বলছে। কিছু ছেলে মেয়ে ফুল বিক্রি করার জন্য এক গাড়ি থেকে অন্য গাড়িতে ধাক্কা দিচ্ছে। কেউ নিচ্ছে আবার কেউ নিচ্ছে না। রাফি ভালো করে দেখলো একজন
পা ভাঙা ভিক্ষুক লাঠিটে ভর দিয়ে একটা দামি গাড়ি তে ধাক্কা দিচ্ছে কিন্তু কিছুক্ষন পর গাড়ির কাচ টা নামিয়ে একটা লোক,,ভিক্ষুক টা কে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। কিন্তু কেউ ভিক্ষুক টা কে তুলতে সাহায্য করছে না। রাফির চোখ লাল হয়ে আসছে মনে হচ্ছে এই শহরটা কে ধ্বংস করে
দিতে। যেখানে থাকবে না ধনীদের অত্যাচার। সবাই মিলেমিশে থাকবে,, এই সব কিছু ভাবছিলো রাফি হঠাৎ ই মেডামের কথাটা শুনে তার হুস আসে। সেটা দেখে ক্লাসের সবাই হাসতে থাকে,, রাফি মাথাটা নিচু করে নেয়। মেডাম সবাইকে থামিয়ে দিয়ে বলতে থাকে-- এই ছেলে তোমার নাম কি।
রাফিঃ ম্যাম রাফি হাসান।
মেডাম: নাম টা ত সুন্দর,, কিন্তু নামের সাথে চেহারা, পোশাকের ত কোনো মিল দেখতে পাচ্ছি না। তোমার ক্লাস মেট দের দেখছো কতো পরিপাটি হয়ে আসছে
কিন্তু তোমার কাপড় কাচোঁ না কেনো। এত অপরিষ্কার থাকো কিভাবে। মেডামের কথাগুলো রাফির মনের ভিতর তীরের মতো বিধছে। মেডামের কথার প্রতি উওরে রাফি মুচকি হেসে জবাব দেয় ---ম্যাম এখানে শিক্ষা অর্জনের জন্য এসেছি,যদি ভালো পোশাক পরে স্টাইল করে আসি তাহলে নিজেকে নিজের কাছে বড় মনে হবে, আর যার যেমন সামর্থ্য আছে সে তেমন ই করে পোশাক
পরে আসবে,,আমার ওদের মতো সামর্থ্য নেই তাই ভালো পোশাক পরতে পারি না। ম্যাম অাল্লাহ্ তায়ালা সবাইকে একি
রকম করে সৃষ্টি করে নি একজন কে কালো আরেকজনকে সাদা এটা তে তো আমার কিছু করার নেই। ম্যাম
আমার কথায় কষ্ট পেলে মাফ করবেন।
ম্যাম রাফিকে আর কি না বলে ক্লাস করাতে থাকেন। রাফি ক্লাস শেষ করে চলে আসে ক্যাম্পাসের পুকুরের দিকে। কিছুক্ষণ পর ফুলের ঝুড়ি নিয়ে আসে মুন্না।রাফিকে দেখে বলতে থাকে -- কেমন আছেন ভাই।
রাফি পাশে চেয়ে দেখে মুন্না নামের ছেলেটি তাকে জিজ্ঞেস করলো। রাফি মুচকি হেসে জবাব দেয় -- ভালো তুই কেমন আছিস। আর তর মা কি পরের দিন সকালে চলে আসছিলো।
মুন্না: আই ছিলো তয় মায়ের অবস্থা ভালা আছিল না,, জামা কাপর ছিরা আসিলো,
আমি জিগাই ছিলাম কি হইছে কিন্তু আমারে কিছু কয় নাই। মায়রে নিয়া থানাতেও গেছিলাম।মুন্না এটা বলে মুখটা কালো করে ফেলে। রাফি তাড়াতাড়ি প্রশ্ন করে --পরে কি হইছে।
মুন্না: আফনার আর হুনন লাগবো না
রাফিঃ একটা দিবো আমাকে বল।
মুন্না: মায়রে লইয়া থানাত গেছি মতো,, মায়রে একটা পুলিশ খারাপ খারাপ কথা বলে। আর আমারে দুইডা থাপ্পড় মারে। আমারে কয় আমার মা নাকি বেস্যা** তাই আমাগো কোনো বিচার হুনবো না। রাফির চোখ দুইটা লাল হয়ে আসছে মনে
হচ্ছে সে পৃথিবীর সবচেয়ে হিংস্র। রাফির চোখ লাল দেখে মুন্না বলে-- ভাই আমনের চোখ এমন লাল হইয়া রইছে কেন
রাফিঃ শুন পুলিশ কোনো বিচার করবে না তুই কি ঐ দিনের লোক গুলোকে চিনতে পারবি।
মুন্না: হ পারুম না কেন। এহন ও তো দেইহা আইছি দোকান পারে বইসা আছিল। মুন্নার কথা শুনে রাফি উঠে দাঁড়ায় আর বলতে থাকে-- আমাকে নিয়া চল দোকান পারে। মুন্না রাফিকে দোকান পারে নিয়ে লোকগুলোকে দেখায়। রাফি লোকগুলোকে তার মাথায় সেট করে নেয়।
মুন্না বলে-- ভাই আমনে হেগো দেইহা কি করবেন।
রাফিঃ যদি ওদের মেরে ফেলি। মুন্না জোরে জোরে হাসতে হাসতে বলতে থাকে -- আফনার যেই না শরীর। হেরা একটা মারলে আমনেরে আর পাওয়া যাইব না।
আর হেগ ডাই সব সময় গুলি থাহে আমি দেখছি। রাফি আর কিছু না বলে সে তার গন্তব্যে দিকে অগ্রসর হয়.........
“ রাজ আমি চিন্তা করছি,, তুমি রাফসান ও রাফিনের কেসটা দেখো। আর ফরহাদ স্যার কে বলে CBI অফিসার ‘ রিফাত ’ কে দিয়ে হ্যাকার টিম টা ধারাতে বলবো ”
রাজ ও মেহেরাব দুজন সামনাসামনি বসে আছে। হঠাৎ ই মেহেরাব এ কথাটা বল ওঠে। রাজ প্রতি উওরে বলে বলে জ্বি স্যার আমি ওদের দুজনের একটা আর্টিকেল পড়তেছি। ওদের মাস্টার মাইন্ড দিয়ে ওদের ধরবো। মেহেরাব রাজের একটা জিনিস লক্ষ্য করছে যে,,রাজ সব সময় তার হাতের মধ্যে দুইটা মারবেল নিয়ে ঘুরাঘুরি করে। কিন্তু এমন তো করে রাফিন তবে না না রাজ হতে যাবে কেনো। মেহেরাবের মাথায় বুদ্ধি আসে যে ঐই দুইটা মারবেলের ফিঙ্গার প্রিন্ট আর রাজের ফিঙ্গার প্রিন্ট মেচ করে দেখবে মিলে কি না।
রাজ: ওকে স্যার তাহলে আমি এখন আসি। মেহেরাব সেখানে বসে বসে ভাবতেছে সে কি এই রহস্যের উন্মচন করতে পারবে।
“ রাত ১:৫০ মিনিট ”
সানি, আশিক, জিসান
মদের আড্ডা থেকে আসছিল। হঠাৎ সামনে দেখতে পায় কে যেন রাস্তার মাঝে বাইক নিয়ে বসে আছে,, পরনে তার কালো পোশাক,, বাইকের উপর আরাম করে বসে বসে সিগারেট টানছে। জিসান যেয়ে আগন্তুক
এর বাইকের সামনে যেয়ে হর্ণ বাজায় কিন্তু আগন্তুক বাইক থেকে নামে না দেখে,, সানি নেমে আগন্তুকের থেকে সিগারেট টা নিয়ে টানতে থাকে আর বলতে থাকে -- কি সমস্যা তোর রাস্তার মাঝে বাইক নিয়ে বসে আছিস। সামনে থেকে সর এখন কোনো ঝামেলা করবো না,,কথাটা বলে সানি বাইকে যেয়ে বসবে এমন সময় আগন্তুক টা হাসতে হাসতে বলতে থাকে...........
## চলবে##
[ এই পর্ব টা বড় করে দিয়েছি,, আশা করি সবারই ভালো মন্তব্য। আর গল্প টা পড়েন কিন্তু সবাই শুধু লাইক দেন,, লাভ দিলে কি কোনো সমস্যা,,গল্প টা কি অতটা ভালো হয় না নাকি। যাক এখন আপনাদের ইচ্ছা। ]
wait for the next part.
No comments:
Post a Comment
ok