Sunday, June 13, 2021

রঙের ফেরিওয়ালা -- Raja Bhuiya.



রোমান্টিক সিরিজ  


রঙের ফেরিওয়ালা


লেখক: RAJA Bhuiyan


পর্ব:-২


........




মনের মধ্যে একটা ভালো লাগা কাজ করছে বন্ধুদের কথা গুলো আসলে সত্যি। শ্রাবণী আমার অজান্তে আমাকে নিয়ে তার রিদয়ে সুপ্ত অনুভূতি তৈরি করেছে

সে আমাকে ভালোবাসে। তার মনের গহীনে এখন আমি অবস্থান করছি। চিঠি টা পড়ে আমার মন টা খুশি জোয়ারে ভরে গেছে।




সময়টা ‘ ২০১৭ ’ এইচএসসি পরীক্ষা শেষ আজ দু বছর পর বাসায় যাব। দেখতে দেখতে দুটি বছর কিভাবে কেটে গেছে বুঝতে পারছি না। এই দু বছরের মধ্যে একবার ও বাসায় যাই নি,,ভালো করে পড়াশোনা করেছি। বাসে বসে বসে চিন্তা করছি,বাসায় তো প্রতিদিন কথা বলতাম কিন্তু শ্রাবণীর সাথে তো কখনো যোগাযোগ হয় নি আমার। সেই ছোট্ট শ্রাবণী কেমন হয়েছে দেখতে,, আমাকে দেখলে চিন্তে পারবে।এখন মনে হয় ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে পড়ে,,সে কি তার দেওয়া কথা ভুলে গেছে, আর ভুলবেই না কেনো তার 

সাথে তো আমি কোনো যোগাযোগ রাখি নি। বাস কন্টাকদারের কথায় আমার হুস ফিরলো,,মুচকি হেসে বাস থেকে নেমে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। ঋতু চক্রের প্রথম ঋতু গ্রীষ্মকাল। এ সময় বাংলাদেশের রূপ হয়ে ওঠে রুক্ষ ও শুষ্ক। প্রখর সূর্যতাপে পৃথিবীর বুক বির্দীন হয়ে যায়, চৌচির হয়ে যায় তার তৃষ্ণার্ত প্রান্তর। নদী-নালা, খাল-বিল শুকিয়ে যায়। পৃথিবীর প্রাণরস শোষিত হয়ে কম্পিত শিখায় উঠতে থাকে মহাশূন্যে। তবে গ্রাম এলাকায় অধিক পরিমাণে গাছ-পালা থাকার করণে গ্রাম এলাকাটা সজীব থাকে। রোদ্রের তাপ অধিক হলে গাছপালার হিমেল বাতাসে পরিবেশটা ঠান্ডা হয়ে যায়। হঠাৎ ধেয়ে আসা কালবৈশাখী প্রচন্ড ঝড়। কোথাও প্রাণের চিহ্নমাএ থাকে না,,থাকে না শ্যামলতার আভাস। তবে গ্রামের চেয়ে শহরের এই গ্রীষ্মের প্রভাবটা একটু বেশি। আধুনিকতার যাবতীয় সুযোগ সুবিধা রয়েছে শহরে। ঘর থেকে বের হলেই পিচ ঢালা পথ,,প্রচন্ড রোদের উওাপে রাস্তার পিচ গলতে থাকলেও যানবাহনের অভাব নেই। বড় বড় অফিসে রয়েছে এসির ব্যবস্থা। সেখানকার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিসে বসে গ্রীষ্মের চরিত্র বুঝা যায় না। এগুলো ভাবতে ভাবতে গাড়ি থেকে নেমে দু বছর পর গ্রামের মাটি তে পারা দিলাম মনটা ভরে উঠলো। মনে চায় না গ্রাম থেকে শহরে আবার চলে যাই কিন্তু জীবন বড় হতে চাইলে 

তো যেতেই হবে। গ্রামের অনেক পরিচিত লোকদের ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করলাম। অনেকে আবার চিন্তে পারছে না আমাকে। কিভাবে চিনবে এখন তো আগের থেকে বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরের গঠন, মুখের দাঁড়ি, গোফ যার কারণে আগের চেহারাটার সাথে মিল পাওয়া যাচ্ছে না। জানা নেই বাসায় সবাই আমাকে চিনবে কি না। আগের থেকে গ্রামের পরিবেশ টা বেশ পরিবর্তন হয়েছে,

বন-জঙ্গল কেটে বসত

বাড়ি তৈরি হচ্ছে। অবশেষে নিজের গন্তব্যে পৌছালাম মা-বাবার সাথে দেখা হলো,, মা আমাকে দেখে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিলো। হয়তো দুই বছরের দূরে থাকার কান্না। বাড়ির অনেকের সাথে কথা হলো। বিকালের দিকে পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা করার জন্য খেলার মাঠে চলে গেলাম। সবার সাথে কথা বলে ভালো লাগলো, তবে একটা খবর শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেলো,, শ্রাবণী রা নাকি ২ মাস আগে ঢাকায় চলে গেছে। খবরটা শুনে খুবই খারাপ লাগছিলো কিন্তু কেউ তাদের ঠিকানা আমাকে বলতে পারছিল না,,তাদের জানা নেই শ্রাবণীদের ঠিকানা। গ্রামে বেশ কিছু দিন থেকে চলে আসলাম ব্যস্ত ঢাকা শহরে। অনার্সের জন্য অনেক গুলো ভর্তি পরীক্ষা দিলাম। আলহামদুলিল্লাহ একটাতে চান্স পেয়ে গেলাম। কাল থেকে ভার্সিটি যাওয়া শুরু করবো,, মনের ভিতর আলাদা কিছু অনুভূতি  

ফিল করছি। কিন্তু আবার সামান্য ভয় করছে শুনছি ভার্সিটি

তে বড় ক্লাসের স্টুডেন্ট রা ছোট ক্লাসের স্টুডেন্টদের র্যাগ দেয়। 




“ আজ আমার ভার্সিটির প্রথম দিন তাই বেশ পরিপাটি হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি,সাদা কালারের একটা চেক লম্বা হাতার শার্ট হাতা গুলো  

ফল্ট করা, কালো জিন্স, এক জোরা কনবার্স, হাতে ঘড়ি, চোখে স্টুডেন্ট চশমা,চুল গুলো ঠিক করে বডি স্পেটা ব্যবহার করে বেড়িয়ে পরবো এমন সময় মেসের বড় ভাই 

‘ রাজিন ’ আমাকে থামিয়ে বলে-- কিরে ডেটে যাচ্ছিস নাকি কোথাও। 




আমি: আরে নাহ্ কি যে বলো না ভাই। ভার্সিটিতে যাচ্ছি তাই এমন ড্রেসআপ প্রথম দিন তো তাই,,আসি ভাই। একটা রিকশা নিয়ে চলে আসলাম ভার্সিটিতে,,ক্যাম্পাসটা 

খুবই সুন্দর আর বড়। গেট পেড়িয়ে ক্লাসের উদ্দেশ্য রওনা দিবো এমন সময় পিছে থেকে কেউ বলল-- এই সাদা শার্ট, এদিকে আয়। আমি সামনে পিছনে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করছি কাকে ডাকে,,দূরে একজন ছেলেকে দেখা যাচ্ছে সাদা শার্ট পরে আছে। তাকে ডাকলে তো আরো জোরে ডাকতে হবে, আমার কি আমি ক্লাসে যাব, সামনে এগিয়ে যাব তখন শান্তা নামের একটা মেয়ে বলে-- এই এদিক ওদিক কি দেখিস তকেই ডাকছি। আমি এভার পিছনে ফিরে দেখলাম 

আমার দিকে ইশারা দিচ্ছে। আমি সেখানে যেয়ে বল্লাম-- জ্বি আপু আমাকে কেনো ডেকেছেন।




শান্তা: সেটা তকে বলতে হবে। তকে তো আগে কখনো ভার্সিটিতে দেখি নাই, নতুন নাকি।




আমিঃ জ্বি আপু আমি প্রথম বর্ষে নতুন ভর্তি হইছি।



শান্তা: ওও আচ্ছা আমরা সবাই তোর সিনিয়র আমাদের সবাই কে সবসময় সালাম দিবি,,ঠিক আছে।



• আচ্ছা বলে ক্লাসের দিকে রওনা দিলাম। ক্লাসের মাঝখানে একটা বেঞ্চে যেয়ে বসলাম কিছুক্ষণ পার স্যার এসে সবার সাথে পরিচয় হয়ে গেছেন। তিন জনের সাথে ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। ক্লাস শেষে বাইরে এসে আড্ডা দিচ্ছিলাম চারজন মিলে তখনই ছেলে ভার্সিটির গেট দিয়ে একটা সুদর্শন যুবক প্রবেশ করে,,পরনে তার কালো কালারের শার্ট, কালো জিন্স, চোখে স্টাইলিস চশমা,গলায় মোটা চেন, চুল গুলো বড় বড়,, হাতে জ্বলন্ত সিগারেট টা টানতে টানতে ভিতরে প্রবেশ করল। আমরা সবাই ঐ দিকে চেয়ে আছি।

ছেলেটার নাম জয় এই ভার্সিটির ভিপি। সবাই তাকে কম বেশি ভয় করে। আমরা আমাদের মতো আড্ডা দিচ্ছি।



........


কিরে নীলা কি এত ভাবছিস তুই,,কখন থেকে ডাকছি শুনতে পারছিস তুই। বৃষ্টির কথায় ধ্যান ভাঙে নীলার সে এতক্ষণ রায়ান নামের ছেলেটির কথা ভাবতে ছিলো। নীলা জবাব দেয়-- আরে কিছু না এমনি ভাবছিলাম। নীলার এ কথা যেন কারো বিশ্বাস হচ্ছে না সন্দেহের সৃষ্টি তে নীলার দিকে চেয়ে আছে। বর্ষা বলেঃ তর চেহারা কিন্তু অন্য কিছু বলছে এখানে তো কোনো রহস্য আছে হুম। লাজুক হাসি মনে কোনো ছেলেকে নিয়ে ভাবা।তা ছেলেটা কে।



নীলাঃ কি যে বলিস আমি আবার কোন ছেলেকে নিয়ে ভাববো



শান্তাঃ আরে আমি বুঝতে পারছি নীলা কার প্রেমে পরেছে।

সবার নজর এখন শান্তার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এবার শান্তা একটু ভাব নিয়ে বলে-- আরে সকালের ঐ প্রথম বর্ষের নতুন ছেলেটা সাদা শার্ট। এ কথা শুনে নীলার চোখ বড় বড় হয়ে গেছে,, শান্তা কিভাবে বুঝলো। 



বৃষ্টিঃ তবে যাই বলিস নীলার সাথে ছেলেটা বেশ মানাবে। এ নিয়ে তারা সবাই আড্ডা দিচ্ছিলো। 




............




• আজ আমাদের নবীন বরণ অনুষ্ঠান,, কি পরে যাব তাই ভাবতে ছি। রাজিন ভাইয়ার কাছে জিজ্ঞেস করলাম অনুষ্ঠানে কি পরে যাব।




• রাজিন ভাইয়া বল্লেন- কি আর পরে যাবা পাঞ্জাবি পরে যাও।



• আমারো ইচ্ছে ছিল আজ পাঞ্জাবি পরে যাওয়ার। যেই ভাবা সেই কাজ,, একটা কালো পাঞ্জাবি, সাদা চুরিদার, চোখে স্টুডেন্ট চশমা,, চুল গুলো ঠিক করে বেড়িয়ে পরলাম ভার্সিটির উদ্দেশ্য। আজ ভার্সিটি টা অাগের চেয়ে খুব সুন্দর করে সাজিয়ে ছে। মনে হচ্ছে আমি কোনো ফুলের পার্কে চলে এসেছি। পরিবেশ টা আমার কাছে খুবই মনোমুগ্ধকর হয়ে গেছে। কিছুক্ষন পর আমার সব বন্ধু রা চলে এসেছে।



• সাব্বির আমাকে দেখে বলে কি মামা তকে তু কি আর বলবো খুবই ভালো দেখাচ্ছে। সব মেয়েরা তো তকে দেখছে। আমরা যে এখানে আছি কারো চোখেই পরে না।




•আমি বল্লাম-- কি যে বলিস,, কই কেউ তো আমার দিকে চেয়ে আছে না। সব সময় শুধু মজা করিস।

হঠাৎ আমার চোখ জোরা গেটের দিকে আটকে যায়,, একটা মেয়েকে দেখে যার বর্ণনা আমি দিতে পারবো না।  তবে এখানে কোনো কবি থাকলে নিশ্চয়ই তাকে দেখে কবিতা লিখে ফেলতো। মেয়েটার পরনে কালো কালারের একটা শাড়ি,,হাতে কিছু নীল রঙের চুরি,,চুল গুলো মধ্যে রজনীগন্ধা গাঁথা,

ঠোঁটে লাল লিপস্টিক।  আমার বুকের বা পাশ 

 তো কেঁপে উঠল। কি এ অজানা অনুভূতির সৃষ্টি জানা নেই আমার। এক ধেনে চেয়ে আছি মেয়েটার দিকে সাথে তার কিছু বান্ধবী রয়েছে কিন্তু সবার চেয়ে তাকে সুন্দর লাগছে। কি মিষ্টি তার হাসি,, এ হাসি দেখে আমি তো পুরা শেষ। কিন্তু আমার বুকের বা পাশে এমন হলো কেনো এটা তো হতো,,

আমার আসে পাশে শ্রাবণী থাকলে তবে,,

না না এটা শ্রাবণী হতে যাবে কেনো কিন্তু শ্রাবণীর মতোই চেহারা কে হতে পারে এটা........... 




### চলবে###

 

( রোমান্টিক কারিগর) 



[  পর্ব গুলো দিতে দেরি হবে কারণ এই গল্পে অতটা সাপোর্ট পাই না,,সাপোর্ট পেলে প্রতিদিন ই দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ ]





wait and the next part

No comments:

Post a Comment

ok

KGF of Diamond City. ৪ # লিখা :- RAJA Bhuiyan. (মি.440) # পর্ব :- ০ ৪

 # গল্প :- KGF of Diamond City. ৪ # লিখা :- RAJA Bhuiyan. (মি.440) # পর্ব :- ০ ৪ ............. আকাশে তাজা সূর্যের তীব্র আলো। শকুন আর গাংচিলদ...