রোমান্টিক সিরিজ
রঙের ফেরিওয়ালা
লেখকঃ RAJA Bhuiyan.(মি.440)
পর্ব :--- ১
“ সময় টা ২০১৫” আমি তখন ক্লাস ১০ এ পড়ি।
সকাল বেলা কোচিং করার উদ্দেশ্য বেরিয়ে
পরেছি। আজ পরিবেশ টা অন্যদিনের চেয়ে বেশি
আকর্ষণীয়। বসন্ত এক রোমান্টিক ঋতু। শীতের শূন্যতাকে তাড়িয়ে যৌবনের বার্তা আর রোমান্টিকতার আমেজ নিয়ে মহা সমারোহে হাজির হয় বসন্ত। বসন্তের প্রকৃতি
খুবই মনোরম ও আকর্ষণীয়। নতুন পাতায় আর ফুলে ফুলে তখন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে সবুজ বন-বনানি। আমার কাছে সকালটা অসম্ভব ভালো লাগতেছে। হঠাৎই দেখতে পাই শ্রাবণীকে সাইকেল চালিয়ে কোচিং সেন্টারের গেটের ভিতর ঢুকলো। আজ শ্রাবণী আকাশি কালারেরে জামা আর সাদা কালারের প্লাজো
পরছে। শ্রাবণী মেয়েটা
দেখতে অসম্ভব সুন্দর
ঘন কালো চুল,, দৈর্ঘ্য আঁখি পল্লব,, দুধে আলতো গায়ের রঙ,, বাচ্চাদের মতো ইনোসেন্ট চেহারা,, চোখে আবার চশমা পরে যার কারণে তাকে অনেক কিউট লাগে। বসন্তের এই প্রথম সকালে তাকে দেখে মনের মধ্যে একটা অনুভূতি সৃষ্টি হলো,,জানি না কি এই
অনুভূতির নাম। শ্রাবণী ক্লাস ৮ এ পড়ে, আমার থেকে ২ বছরের জুনিয়র কিন্তু তার সাথে আমার দেখা হলেও কথা হয় না। স্কুলে অনেকে বলতো শ্রাবণী আমাকে নাকি পছন্দ করতো,, আমার দিকে চেয়ে থাকতো। কিন্তু আমি তাদের কথা শুনতাম না। আজ সকালে কেন যেন তাকে দেখে মনের ভিতর একটা অদ্ভুত অনুভূতি তৈরি হচ্ছে তবে তা কি আমার জানা নেই।
“ এসএসসি ”পরীক্ষার জন্য জন্য স্কুল ও কোচিং যাওয়া বন্ধ,, আজ প্রায় ১৫ দিনের মতো হলো শ্রাবণীকে দেখি না। মনটা কেমন
কেমন যেন করে, মনে হয় এক বার দেখলে বুকের ভিতর প্রশান্তি
বয়ে আনে। এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়ে দিয়েছে, ভালো রেজাল্ট করছি। কিন্তু সমস্যা হয়ে গেলো ঢাকাতে একটা সরকারি কলেজে চান্স পেয়েছি। কিন্তু মনটা চাচ্ছে না সেখানে ভর্তি হই। নিজের এলাকা, মা-বাবা, বন্ধু-বান্ধব, আর ঢাকায় গেলেতো শ্রাবণী কে দেখতে পারবো না।
আজ আমাকে ঢাকায় চলে যেতে হবে
ভাবতেই মনটা কেমন যেন করে উঠছে। ভাবলাম স্কুলে যেয়ে শ্রাবণী কে একবার দেখে আসব, যেই ভাবা সেই কাজ চলে আসলাম স্কুলে দেখলাম শ্রাবণী শহীদ মিনারে মন খারাপ করে বসে আছে। না আমি এখন ওর সামনে যাব না,, গেলে আমার মনের সুপ্ত লোকানো অনুভূতি গুলো প্রকাশ হয়ে যাবে। বন্ধুদের সাথে দেখা করে, স্যারদের সাথে দেখা করে,,শেষ বারের মতো স্কুলটা দেখে থেকে বেড়িয়ে পরলাম বাড়ির উদ্দেশ্য, কত স্মৃতি, হাসি, খেলা, ঝগড়া, বন্ধুদের সাথে মজা করা, অনেক মিস করবো,,চোখ থেকে দু ফোটা জল বেরিয়ে পড়লো। হঠাৎ রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে, শ্রাবণী তার সাইকেল টা আমার সামনে থামায়,, সাইকেল থেকে নেমে আমার সামনে দাঁড়ায়,, অবাক হয়ে তার দিকে
চেয়ে আছি সে আমাকে কিছু না বলে আমার হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে সাইকেল টা নিয়ে চলে
যায়। আমি বুকার মতো শ্রাবণীর চলে যাওয়ার দিকে চেয়ে আছি,,সে দূরে যেয়ে একবার আমার দিকে চেয়ে,, চলে যায় হয়তো দেখা হতেও পারে আবার নাও হতে
পারে।
ঢাকায়, আমার পাশের গ্রামের এক বড় ভাই থাকে। ওনার সাথে কথা বলে ওনাদের মেসে উঠছি। আমার এই বড় ভাইয়ের নাম ‘আসিফ’
এভার অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ছে। মেসে আমরা ৬ জন থাকি। রাতে ঘুমানোর আগে মনে হলো শ্রাবণীর দেওয়া কাগজের কথা,, বেগ থেকে কাগজ টা বের করে পড়া শুরু করলাম---
প্রথমে আমার সালাম নিবেন,
আশা করি ভালো আছেন, ‘ রায়ান ’
প্রথমে বলে রাখি আপনাকে সবাই ‘রাজা’ বলে ডাকলেও আমি আপনাকে রায়ান বলে সম্মোধন করি,, আর সিনিয়র হিসেবে আপনাকে ভাইয়া না বলার একটা করণ আছে,,ভালোবাসার মানুষ কে কখনো ভাইয়া ডাকা যায় না। হে আমি আপনাকে ভালোবাসি,, কোনো এক শীতের সকালে,..
আজ আমি (........) বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হবো। শীতের সকাল ৯:৩০ হবে কুয়াশা ভেদ করে হালকা রোদ্র দেখা যাচ্ছে, আমি স্কুলের গেইট দিয়ে প্রবেশ করার সময়,, হঠাৎ শহীদ মিনারে দাঁড়ানো একটা ছেলেকে দেখে চোখ আটকে যায়। পরনে তার সাদা শার্টের ওপর কালো কালারের শর্ট জ্যাকেট,, নেভি ব্লু পেন্ট,,চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা,, পায়ে স্কুল শু। ছেলেটা হেসে
হেসে সামনে দাঁড়ানো দুটো ছেলের সাথে কথা বলতেছে। ছেলেটা কে দেখে আমার বুকের বা পাশটা কোনো কিছুর আগাম সংকেত দিচ্ছিলো। অসম্ভব ভালো লাগা মনের ভিতর বয়ে যেতে থাকে। বয়স টা তখন একটু কম ছিলো তাই বুঝতে পারছিলাম না কি কারণে এই অনুভূতি। আস্তে আস্তে
স্কুল যাওয়া শুরু করি,, আর সেই ছেলেটার সম্পর্কে জানতে থাকি,, যেই দিন ছেলেটার নাম জানতে পারি,
“রায়ান রহমান রাজা ”
সেই দিন থেকে নামটা মনের ভিতর গেথে গেছে। জানি না আমার সম্পর্কে কি ধারনা তার মনের ভিতর। আর সেই ছেলেটা রায়ান আপনি, আমি আপনাকে ভালোবাসি। জানি আপনি মনে করবেন এগুলো সব আমার আবেগ,, কিন্তু এটা আপনার ভুল ধারনা। আমি এখন ক্লাস নাইনে পড়ি বয়সের সাথে সাথে ভিবেক বুদ্ধি ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। শেষে শুধু এইটুকই বলবো আমার মনের সুপ্ত অনুভূতি গুলো মিথ্যা না। ঢাকায় গিয়েছেন ভালো মতো পড়াশোনা করবেন। আর আমি আপনার জন্য অপেক্ষায় থাকবো। ভূলে যাব না আপনাকে কখনো।
ইতি..
ছোট শ্রাবণী.
##চলবে##
wait for tha second part
No comments:
Post a Comment
ok